Featured Post

কবিতাঃকলিযুগের সমাজ ,কবি -জাহানুর হোসেন ,New Bengali Poem- Koli Juger Somaj . Poet- Jahanur Hushen

 কলিযুগের সমাজ         জাহানুর হোসেন সমাজ হইলো সভ্যতার কারিগড় , সাধারন মাটি দিয়া তৈরি হয় ঘড়। এ কেমন কলিযুগ? যেখানে জনক জননী অপুজ্য, আর মেয়েদের নাকি অসর্য । এ কেমন কলিযুগ? যেখানে মাতাকে ঘৃণা আর পিতাকে অসম্মান, যেখানে মেয়ে কে জন্ম দিলে নাকি সমাজের কাছে  অপমান। এ কেমন কলিযুগ? যেখানে না পাওয়া যায় সম্মান, না পাওয়া যায় ভালোবাসা । যেখানে মেয়েদের মন খুলে শ্বাস নয় অন্ধকারে রাখে  আশা। এ কেমন কলিযুগ? যেখানে মেয়েদের সম্মান নয়, করা হয় অপমান । যেখানে মেয়েদের স্বপ্ন ভাবেনা, না বুঝে কন্যাদান। এ কেমন কলিযুগ? যেখানে শিক্ষার ধারায় কিছু নয়, টাকা দিয়া সব চেনা, যেখানে জন্মদাত্রী মায়ের তুলনার  মেয়ে কে হয় বেচা _কেনা। সমাজ তো বদলাবেনা আমাদের ভাবনা বদলাতে লাগবে, তবেই তো মায়ের মতন সম্মান জনক মেয়েরাও জাগবে।।

গল্পঃ- ইস্কুল জীবনের স্থিতি,লেখকঃরুহুল আমিন । Bengali Story | Ruhul Amin

        ইস্কুল জীবনের স্থিতি                                      

                                                 রুহুল আমিন 

                                     


                                        

ব্যাবসার সমস্ত দ্বায়িত্ব সন্তানের কাঁধে ফেলে সুমন এখন অবসর প্রাপ্ত জীবন-যাপন করছেন। সমস্যা শুধু সময় ব্যয় করা নিয়ে, বই পড়ে আর একটা চিন্তার জগৎ গড়ে তুলতে বাকি সময়টা সে কাটাতে চায়। দিন-দুপুরে ঘুমালে শরীরটা ম্যাজম্যাজ করে সুমনের। রাতে ঘুম আসে না পায়চারি করতে হয়।

বিকালে হাঁটতে বার হয় ফুটপাত ধরে, কখনও স্টেশনের পাশে বসে ট্রেন ও জনমানবের ভীড় লক্ষ করে। ট্রেন আপন সময় লক্ষ করে চলতে থাকে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের স্কুল ইউনিফর্মে দেখে। সুমনের মন একে একে ফিরে যায় ফ্লাসব্যাকে স্মৃতির বন্ধনে।

স্কুলের সাথে সুমনের দেখা হয়নি কয়েক বছর। স্যারেরা বদলি হয়ে গেছে। ভাবতেই ভিতরটা কেপে ওঠে তার, তখনই সে বুঝতে পারে আসল অপূর্নতাটা কোথায়। বিপদ সংকেতের মতো লাল টকটকে রং কেন তার চোখের সামনে ভাসছে। স্কুলে যেতেই দৌড় শুরু হতো তার ক্লাস রুমে পৌছবার তড়িঘড়িতে।

 

 নিষ্পাপ স্মৃতির মৌলিকতার মিলবন্ধন সেখানে। মুহূর্তে শুখা মাটি যেমন জল শুষে নেয়। ঘটনার ইটের ওপর ইট গেঁথে তৈরি হয় স্মৃতির মেলা। বিস্ময়হীন তৃষ্ণা তার ক্লাস রুমের সাথে। পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা উজাড় হয় সেখানে। ক্লাসরুমের সেই বন্ধুরা আজ অদৃশ্য। তৃষ্ণার বাসক চরিত্র গুলি পরিচিতি উপাদানের সাথে খেলে। আশ্চর্য ও মুগ্ধ হতে হয় গবেষণার কোনো প্রয়োজন নেই সুমনের মন সেই স্কুল বালকের মতোই আছে। ত্রুটি বিহীন ভাষায় আত্মসচেতনতার বিন্যাস ঘটিয়ে একান্ত নিজস্ব সুরে জাতীয় সঙ্গীত বলেই চলেছে সুমন।

 

তার মনে উদিত হয় সেই পৌষে বাদল এলে, হাড় হিম করা ঠান্ডায়, ক্লাস রুমের আলাদা পরিবর্তন লক্ষ করা যেতো। কিছুটা হলেও টিফিন সময় মাঠে আগুন করার অভ্যাস তখন শীতের প্রকোপ এড়াতেই। বসন্ত যায় শীত আসে, এ সময় চাষির ধানে এক ঝাঁক পাখির অধিকার থাকে। সুমনের বয়স তখন সবে মাত্র আঠারো, জাতীয় সঙ্গীতের লাইন ছেড়ে দোতলার কার্নিসে লুকিয়ে থাকতো তারা আন-ইউনিফর্মে আসার জন্য। ক্লাস শুরু হলে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী কমনরুমে আড্ডার আসর বসাতো। ক্লাসরুমের জানালা দিয়ে ছেলেরা আগত নারীর অপেক্ষায় রত। ম্যামের পড়া বিশেষত তখন সুমনের মাথার উপর ঘুরতো। স্কুল থেকে কেউ বাড়ি ফিরতে চাইত না আর‌ তখনই কম্পিত হতো কমনরুমের ইটের দেওয়াল।

 

রোজ বিকালে সময় পেলে তারা বসতো সেই নদীর তীরে। মাঝখানে থাকতো ঝালমুড়ি সবাই তাকে কেন্দ্র করে গোল হয়ে বসতো। সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে সূর্যের লাল রক্তিমাকে উপভোগ করতো সুমন। জোনাকির মতো জ্বলন্ত নদীর ওই তীরে ইলেকট্রিক বাতি গুলি। শীত কালে আবছায়া বড় গন্ডগোলের। নদীর তীর ধরে হাঁটা নাম হীন সেই মেয়েটির হাতে চিঠি চালাচালিতে ভুল করে চলে যায় তার দিদির কাছে তা নিয়ে টেনশন হয় সুমনদের আড্ডার আসরে। দুটি আঙ্গুল স্টাইল দিয়ে মুখের সামনে ধোঁয়া ছাড়লে ' শীতের সিগারেট ' নাম আবিষ্কার করে সুমন। ধোঁয়াটা শীত না পেলে বার হয়না কখন।

 

বনলতার কথা মনে উঠতেই সুমনের সমস্ত শরীরে এক বিদ্যুত স্রোত খেলে গেলো। বনলতাকে সুমন প্রথম দেখেছিল স্কুলের শিক্ষক দিবসের দিন। সে নাকি স্কুলের নতুন বাসিন্দা।

অনুষ্ঠানের সমস্ত দ্বায়িত্ব সুমনদের উপর ছিল। সমস্ত ক্লাস রুমে সেদিন সুমনদের স্যার ম্যাম সেজে ক্লাস নিতে হয়েছিল। সুমনের সাথে বিপুলের কথার টক্কর চলেছিল, ক্লাস রুমে স্যার সেজে যাওয়া প্রসঙ্গে। সূপর্না বলে উঠলো ঘড়ির দিকে তাকা সময় বয়ে যাচ্ছে। তখনও স্বপ্না এসে পৌঁছায়নি। ওদিকে সুমিত বসিরহাটে গোলাপ কিনতে গিয়েছে এখনও ফিরিনি।

 

হরো বললো চল আমরা অনুষ্ঠানের জায়গাটা সাজিয়ে আসি মাসুদ, রাজু, প্রভাত তার কথায় মাথা নাড়লো। সুমন আর বিপুল ক্লাস সেভেনের রুমে গেলো। বিপুল গল্প করেই চলেছে ওদের সাথে। সুমন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বনলতার মায়াবি মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অনুষ্ঠানের কাজ প্রায় অর্ধলগ্নে।

রত্না সুমনকে রাজুর সাথে দোতালায় তাড়াতাড়ি দেখা করতে বললো।

সুমন পৌছানো মাত্র রাজু বলে উঠলো, আমার অনুষ্ঠানটা সমাপ্ত করবো দেশ ভক্তির গানে নেচে নেচে।

জলের বোতল থেকে ডক ডক করে জল খেয়ে উজ্জল বললো, তুই দেশভক্তি দেখাবি না......... সুজাতাকে পটাবি?

শুনে হরো খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে উঠলো।

রাজু চরা গলায় বলে উঠলো শালাদের শকুনের চোখ কিছুই সহ্য হয় না।

ওদিকে সুমিতকে নাকি লাইসেন্স না থাকার জন্য পুলিশ ধরে রেখেছে। গোলাপ না হলে অনুষ্ঠান শুরু করা যাচ্ছে না।

স্বপ্না সুমনের থেকে ক্লাস রুমের চাঁদার লিস্ট নিয়ে চলে গেলো।

 

মানুষের পছন্দের অনেক সময় বহুগামী হয়ে ওঠে। আবার বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও দ্বিচারিতা লক্ষ করা যায়।  স্কুল নামিও সংসারে প্রেমের প্রবনতা বাড়ে বহুগামিতার কামনাতে।

 

সাথীকা সুমনকে ঠেলে অনুষ্ঠান মঞ্চে তুলে দিলো। মাইক হাতে এই প্রথমবার সুমন। তাতে বনলতা একেবারে সামনের চিয়ারে বসে আছে। কন্ঠের শব্দগুলি যে কাঁপছে তা সুমন ভালোই বুঝতে পারছে।

 

সুমনের হাত শক্ত করে ধরে মাসুদ বললো তুই কাঁপছিস কেন?

পিয়ালি বললো তোরা সেদিন স্যারদের সাথে যা ফুটবল খেললি তা বলার অবকাশ নেই কিন্তু হেরে গেলি। আর মাইক হাতে কন্ঠস্বর কাঁপবে না তাই হতে পারে।

ইরিনা পিয়ালির গলা জড়িয়ে বললো ভ্যানতাড়া না করে আসল গল্পটি ঝেড়ে ফেল।

উজ্জল বললো তোরা ন্যাকামি রাগ। আমরা কি খারাপ খেলে ছিলাম নাকি?

সত্যিতো যথেষ্ট ভালোই খেলে ছিলাম কিন্তু, স্যারেদের  কি করে হারাবো তাই নিজেরাই হেরে গেলাম। ওই দিন স্যার আর ছাত্র সব কাঁদাতে লুটোপুটি। মনের অজান্তেই কথা গুলি জোরে বলে ফেলেছে সুমন।

মাসুদ বললো কন্টিনিউ কর.......

সুমন বলতে লাগল মনের অনুভূতি গুলি।

এবার হরো সত্যিকার ইন্টারেস্ট মনভাব নিয়ে বললো এসব কথা রাখ, সুমন প্রেমে পড়েছে।

সবার কথা ছিনতাই করে স্বপ্না চুপ থাকে। নিস্তব্ধতার মাঝে গুনগুন করে সে বলতে শুরু করে যদি অনুষ্ঠানটা জীবনের প্রত্যেকটা দিন হতো। তবে সুমন নতুন নতুন বনলতার সাক্ষাৎ পেতো।

রত্না বলে আহা ওরকম করে বলছিস কেন?

সাথিকা পাশ থেকে বলে উঠে সমস্তটার মাঝে কিন্তু শিল্পের ছাপ আছে।

অট্ট হাসিতে ফাটে ক্লাসরুম, সুমনের চোখে মুখে রাগ আর অভিমানের ছাপ।

মাধবী বলে উঠলো ঝগড়াঝাঁটি না করে আমরা কি থাকতে পারিনা।

মাধবী সুমনের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বললো। ওর কথাতে বিস্ময়ের আভাস পেলো সুমন।

সুমন বলতে যাচ্ছিল  'এক হাতে তালি বাজে না'  তবু কেন জানি মাধবীর মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারলো না।

 

আবেগ অনুভূতি,বাস্তবতা, মিলেমিশে জীবন। কোনোটিই দীর্ঘ স্থায়ি নয়। যখন শরিলের উপর লোভ বাড়ে বাস্তবতা, অনুভূতি ক্ষণস্থায়ীর পদে লিপ্ত থাকে। স্বাভাবিক ব্যাক্তিত্বের লক্ষন নয়। লোক প্রিয় করে তোলার বাসনা মনসত্বের গলায় ফাঁস বাঁধে। অস্বাভাবিক মেজাজ আসে, সুযোগ পেলেই তার আত্ম প্রকাশ ঘটে। উপযুক্ত বিষয় অবলম্বনের প্রয়োজন হয় না। সংসার নামক সাম্প্রতিক থ্রিয়েটারে সিনেমার মতো তাকে দক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রীর পরিচয় দিতে হয়। জীবন সঙ্গীনির শিকড় অন্তরের গহ্বরে প্রবেশ করে। কখন মেজাজের বহিঃপ্রকাশের সময় সে শিকড় ছিন্ন হয় অন্তর থেকে। সকাল সন্ধ্যা নিরপেক্ষ অনুভূতির মুহূর্তে কিংবা সমুদ্রের নাবিক হীন জাহাজের দূরন্তপনাতে সুখ দুঃখ মিলেমিশে একাকার। আহ্লাদে অহংকারে দুটি বিন্দু পরপর সম্মিলিত খাতার পাতায়।

 

আলাপ জমাতে বনলতার ফেসবুক একাউণ্ট খুঁজে বার করে সুমন। বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠাই ভয় নিয়ে কিন্তু সে জায়গা করে দেয় তার বন্ধুত্বের লিস্টে। কথা চলে মাঝে মাঝে। ছেলেবেলার দুষ্টুমিতে জীবন সম্পৃক্ত। অপরিবর্তনের ফাঁদে পায়ের আঁচড় কবিতার স্তবকে যায় মিলিয়ে।

 

সুমিত পকেট থেকে রুমাল বার করে মুখ মুছতে মুছতে বললো 'না মুমমকিন হ্যায় ব্যেটা'

উজ্জল বলে পবিত্র জীবনযাপনের মধ্যে সাংসারিক ধাঁচে গার্লফ্রেন্ডের খিঁচুনি তোর কি সইবে ভাই।

সুমিত সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে বললো তোর কষ্ট আমি বুঝি সুমন।

সুমনের দীর্ঘ নিঃশ্বাসের সাথে তাল মিলিয়ে।

নিলাঞ্জনা  গুন গুন করে গান ধরলো "আমাকে আমার মতো থাকতে দাও..........।

সুমনের মুখে বিরক্তির চিহ্ন।

আধ‌-খাওয়া সিগারেট ফেলে সুমিত সোজা কথায় আসলো।

 সবাইকে উপেক্ষা করে কমনরুমে বনলতার আনুরোধে তার দিদির অসম্পূর্ণ প্র্যাকটিক্যাল খাতা সুমন হাতের স্পর্শে সম্পূর্ণ করলো।

বেশি কথা না বলে বনলতা ' থ্যাউক ইউ ' ছুড়ে দিলো।

 

 তার পরনে সাদা জামার উপর সবুজ ওড়না, মাথায় চুল পরিপাটিভাবে বাঁধা, পায়ে ঘ্যামা জুতো, হাতে ডিজাইনের ঘড়ি।

 

সুমিত সুমনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো সত্যি কথা বলব ?

সুন্দর মেয়েদের মন অসুন্দর হয়।

সুমনের ঠোঁটের কোনে হাসির বহিঃপ্রকাশ।

তৎক্ষণাৎ বনলতা সুমনের দিকে তাকায়। তার চোখে লাজুক ছাউনি।

 

সুদর্শন সুবোধ বালকের ন্যায় সুমন তার প্রতীক্ষায় রয়েছে। সমস্ত নেগেটিভকে পজিটিভে রুপান্তরিত করে সুমনের মনে জাগে ভালোবাসার সুগন্ধি।

 

ভালোলাগা মন্দলাগা নয় বরং বনলতার চোখে জীবনের স্বপ্ন আঁকতে চেয়েছিল। স্থিরতা-অস্থিরতা, উত্তেজনা-নিস্তেজতার মাঝে সুমনের অনুভূতির ইটের পর ইটের দেয়াল আজ ক্ষয়ের সম্মুখীন।

 

এক সময় আশ্চর্য হয়ে সুমন তাকিয়ে থাকতো বনলতার দিকে। কয়েক ক্ষুদ্র সেকেন্ডের ব্যবধান থাকতো দুজনের মাঝে, অপ্রত্যাশিত ভাবে দেখতো। বনলতার চোখের মায়া।

 

আপনা থেকেই গড়ে ওঠা সার্থক বন্ধুত্ব গুলো আখ্যায়িত হয় ভারতীয় মরুদ্যানের নামে। নির্বাসন হয় কত কাহিনীর, অশ্রুহীন হাহাকার কান্নাতে পরিনত হয় বন্ধুত্বের পরিধি। তার সীমারেখা স্পষ্ট নয়। কালবৈশাখী ঝড়ের মতো দমকা হাওয়াতে ঝরে‌ পড়া পাতার ন্যায় অথবা কোনো কোনো দুপুরের ঝাপসা ‌স্মৃতির সংলাপের তুলিতে আঁকা গল্পের‌ ছন্দ। মনের গভীরে বেদনার উৎপাত, অন্তরঙ্গতার চিরত্রায়নে সব ব্যার্থতা, কলমের অক্ষর‌ চ্যুতি হয় উৎকীর্ণ দক্ষ প্রেমিকের ন্যায়।

 

বনলতার বাবার চাকরি বদলি হয়। সেও চলে যাও চেনা মানুষ থেকে অচেনার ভিড়ে। সময়টা বড়ো অদ্ভুত সব কিছু বদলে দেয়। সুন্দরী বুদ্ধিমত্তী বনলতার চোখ বোঝেনি কখনও সুমনকে। শব্দ চারনের সমৃদ্ধে অসংলগ্নতার ছাপ। বনলতার সাথে সুমনের যোগাযোগটা একেবারে ছিন্ন হয়। সুমনের একের পর এক দিন কাটে নিঃসঙ্গতার সুরে উদাসীনতার মাঝে। ঘোলাটে হলুদ হ্যারিকেনের আলোতে চিরস্থায়ী জন্ডিসের মতো সিমেন্টের বাঁধানো তির সুমনের বুকে বিধে যায়।

 

শখ-সৌখিনতা পূরনের একটা ব্যাপার থাকে। সমস্ত বন্ধুকে যদি নতুন করে এক সুতোতে বাঁধতে পারতো সুমন, তাহলে আর কি চাই এ জীবনে ? প্রোমোশন ঘটিয়ে সেক্রেটারি হয়ে যেতো সমস্ত বন্ধুর মনে। চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ইতিহাসকে অস্ফুট স্বরে যদি এক জায়গাতে এনে হাজির করতে পারতো। ধুলো জড়ানো সাতজন্মের ভালোবাসা প্রকাশ পেতো একের পর এক। সবাই আবার বাসা বাঁধতো পুরানো সম্পর্কে। সুমনের অনেক বন্ধু এখন পরকালে পাড়ি দিয়েছে কারুর আবার পড়নে বিধবা শাড়ি। হাজার প্রশ্নের ঝঙ্কার চলতো কিংবা তর্কাতর্কি। পার্থক্য শুধু একটাই যা মনে জাগে তা প্রকাশ পায় না।

 

এখন সুমনের  সঙ্গী পুরানো দিনের সেই ফটো ফ্রেম গুলো। কভার ফাইলের ভিতরে খুব যত্নসহকারে গুছিয়ে রেখেছে। বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে সুমনের  স্মৃতি উই পোকাতে নষ্ট করতে পারে।

 

স্মৃতিগুলি যেন মনে হয় সেদিন ঘটেছে জীবনে। চোখ বন্ধ হয়ে আসে নিমেষ নামে জল, মনের অন্তরালে হাজার স্মৃতির ব্যাকুল কান্না, শূন্যতার মধ্যে জীবন কাটে। জোৎস্না মাখা বেদনা সুমনকে জড়ায়‌ তার উষ্ণতার চাদরে। প্রেমের উত্তাপে টানে মন, বন্ধুদের আজ খুব মনে পড়ে সুমনের।

 

"BATCH 2015" কে উৎসর্গ করলাম।।

Comments

Popular post

কবিতা- বৈষম্য, লেখিকাঃ-শ্রেয়সী মিশ্র। Poem:- Boishomya, Poet:-Shreyasi Mishra

কবিতাঃজালিয়ানওয়ালা বাগ ,কবি কলমেঃ-রীতা বসু । Poem: Jallianwala Bagh, Poet:-Rita Basu, new bengali poem

কবিতাঃ-বীরাঙ্গনা , কবিঃ- ফাল্গুনী মুখার্জী। Poem:- Birangana, Writer:- Falguni Mukharjee